জান্নাতী হতে হলে কী পরিমাণ আমল দরকার।

জান্নাতী হতে হলে কী পরিমাণ আমল দরকার? # হাদীসে_কী_আছে ? ---------------------------------------------------------- ﻋَﻦِ ﺍﻟﺰُّﻫْﺮِﻱِّ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ ﺃَﻧَﺲُ ﺑْﻦُ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻛُﻨَّﺎ ﺟُﻠُﻮﺳًﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﻳَﻄْﻠُﻊُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟْﺂﻥَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ " ﻓَﻄَﻠَﻊَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻧْﺼَﺎﺭِ، ﺗَﻨْﻄِﻒُ ﻟِﺤْﻴَﺘُﻪُ ﻣِﻦْ ﻭُﺿُﻮﺋِﻪِ، ﻗَﺪْ ﺗَﻌَﻠَّﻖَ ﻧَﻌْﻠَﻴْﻪِ ﻓِﻲ ﻳَﺪِﻩِ ﺍﻟﺸِّﻤَﺎﻝِ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻐَﺪُ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻣِﺜْﻞَ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﻄَﻠَﻊَ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻣِﺜْﻞَ ﺍﻟْﻤَﺮَّﺓِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ . ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺚُ، ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻣِﺜْﻞَ ﻣَﻘَﺎﻟَﺘِﻪِ ﺃَﻳْﻀًﺎ، ﻓَﻄَﻠَﻊَ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻋَﻠَﻰ ﻣِﺜْﻞِ ﺣَﺎﻟِﻪِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻗَﺎﻡَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺗَﺒِﻌَﻪُ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﺎﺣَﻴْﺖُ ﺃَﺑِﻲ ﻓَﺄَﻗْﺴَﻤْﺖُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺃَﺩْﺧُﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺛَﻠَﺎﺛًﺎ، ﻓَﺈِﻥْ ﺭَﺃَﻳْﺖَ ﺃَﻥْ ﺗُﺆْﻭِﻳَﻨِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻤْﻀِﻲَ ﻓَﻌَﻠْﺖَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻧَﻌَﻢْ . ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻧَﺲٌ : ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺃَﻧَّﻪُ ﺑَﺎﺕَ ﻣَﻌَﻪُ ﺗِﻠْﻚَ ﺍﻟﻠَّﻴَﺎﻟِﻲ ﺍﻟﺜَّﻠَﺎﺙَ، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺮَﻩُ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﺷَﻴْﺌًﺎ، ﻏَﻴْﺮَ ﺃَﻧَّﻪُ ﺇِﺫَﺍ ﺗَﻌَﺎﺭَّ ﻭَﺗَﻘَﻠَّﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﻓِﺮَﺍﺷِﻪِ ﺫَﻛَﺮَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﻭَﻛَﺒَّﺮَ، ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻡَ ﻟِﺼَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ . ﻗَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ : ﻏَﻴْﺮَ ﺃَﻧِّﻲ ﻟَﻢْ ﺃَﺳْﻤَﻌْﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺇِﻟَّﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻣَﻀَﺖِ ﺍﻟﺜَّﻠَﺎﺙُ ﻟَﻴَﺎﻝٍ ﻭَﻛِﺪْﺕُ ﺃَﻥْ ﺃَﺣْﻘِﺮَ ﻋَﻤَﻠَﻪُ، ﻗُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﻋَﺒْﺪَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻧِّﻲ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﺑَﻴْﻨِﻲ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺃَﺑِﻲ ﻏَﻀَﺐٌ ﻭَﻟَﺎ ﻫَﺠْﺮٌ ﺛَﻢَّ، ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻟَﻚَ ﺛَﻠَﺎﺙَ ﻣِﺮَﺍﺭٍ : " ﻳَﻄْﻠُﻊُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟْﺂﻥَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ " ﻓَﻄَﻠَﻌْﺖَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺜَّﻠَﺎﺙَ ﻣِﺮَﺍﺭٍ، ﻓَﺄَﺭَﺩْﺕُ ﺃَﻥْ ﺁﻭِﻱَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻟِﺄَﻧْﻈُﺮَ ﻣَﺎ ﻋَﻤَﻠُﻚَ، ﻓَﺄَﻗْﺘَﺪِﻱَ ﺑِﻪِ، ﻓَﻠَﻢْ ﺃَﺭَﻙَ ﺗَﻌْﻤَﻞُ ﻛَﺜِﻴﺮَ ﻋَﻤَﻞٍ، ﻓَﻤَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻠَﻎَ ﺑِﻚَ ﻣَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖَ . ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻭَﻟَّﻴْﺖُ ﺩَﻋَﺎﻧِﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖَ، ﻏَﻴْﺮَ ﺃَﻧِّﻲ ﻟَﺎ ﺃَﺟِﺪُ ﻓِﻲ ﻧَﻔْﺴِﻲ ﻟِﺄَﺣَﺪٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﻏِﺸًّﺎ، ﻭَﻟَﺎ ﺃَﺣْﺴُﺪُ ﺃَﺣَﺪًﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﻴْﺮٍ ﺃَﻋْﻄَﺎﻩُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻳَّﺎﻩُ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺑَﻠَﻐَﺖْ ﺑِﻚَ، ﻭَﻫِﻲَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻟَﺎ ﻧُﻄِﻴﻖُ .... অর্থ: হযরত আনাস বিন মালিক রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন- একবার আমরা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বসেছিলাম। এ সময় তিনি বললেন- ﻳﻄﻠﻊ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻻﻥ ﺭﺟﻞ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ . ‘এখনই তোমাদের সামনে একজন জান্নাতী আগমন করবে।’ কিছুক্ষণ পর এক আনসারী ব্যক্তি উপস্থিত হলেন যার দাড়ি থেকে ওযুর পানি টপকে পড়ছিলো। তিনি তার জুতা জোড়া বাম হাতে ধরেছিলেন। পরেরদিনও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই কথা বললেন। অর্থাৎ ‘এখনই তোমাদের সামনে এক জান্নাতী ব্যক্তির আগমন ঘটবে।’ সেদিনও সেই আনসারী উপস্থিত হলেন যিনি আগের দিন এসেছিলেন এবং আজও তিনি প্রথম দিনের অবস্থাতেই ছিলেন। তৃতীয় দিন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বললেন- ‘এক্ষুণি তোমাদের সামনে এক জান্নাতী ব্যক্তি আসবে।’ কথা শেষে সেই আনসারী উপস্থিত হলেন এবং তার অবস্থাও পূর্বের আগের দুইদিনের মতোই ছিলো, অর্থাৎ তার দাড়ি দিয়ে পানি টপকাচ্ছিলো আর তিনি নিজের জুতোজোড়া বাম হাতে ধরে রেখেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে যাবার পর আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাযি. সেই আনসারীর পিছু নিয়ে বললেন- ‘আমি আমার পিতার সাথে ঝগড়া করে কসম খেয়েছি যে, আমি তিনদিনের মধ্যে তার কাছে যাবো না। আপনি আমাকে আপনার কাছে তিন দিন অবস্থান করার অনুমতি দিন।’ আনসারী বললেন- ‘ঠিক আছে।’ আনাস বিন মালিক রাযি. বর্ণনা করেন, ‘আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাযি. বলেন- ‘আমি এই তিন রাত সেই আনসারীর সাথে কাটিয়ে দেখলাম তিনি রাতে ইবাদতের জন্য ক্ষণিকের তরেও জাগ্রত হননি। আমি দেখেছি যখন তার ঘুম ভেঙে যেতো তখন নিজের বিছানায় শুয়ে আল্লাহর যিকির এবং তাকবীর বলতেন। অতঃপর ফজরের জন্য জাগ্রত হতেন। আরেকটি বিষয় দেখেছি, তিনি তাঁর মুখ থেকে কেবলমাত্র ভালো কথাই উচ্চারণ করতেন। তিনদিন অতিক্রমের পর আমি তার আমলকে নগণ্যই মনে করেছিলাম। (আমাদের মোকাবেলায় তার তো কোনো বিশেষ আমলই নেই) তখন আমি বললাম- ‘হে আল্লাহর বান্দা! আমার পিতার সাথে আমার কোনোপ্রকারের ঝগড়া-বিবাদ অথবা নারাজ হওয়ার কোনো বিষয় ছিলো না। তবে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনবার বলতে শুনেছি যে, ﻳﻄﻠﻊ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻻﻥ ﺭﺟﻞ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ . ‘এখন তোমাদের সামনে এক জান্নাতী ব্যক্তির আগমন ঘটবে’ এবং তিনবারই আপনি আগমন করেছিলেন। তাই আমি আপনার সাথে থেকে দেখতে চেয়েছি যে, প্রকৃতপক্ষে আপনি কেমন আমল করেন (তা আমি করি না) তা আমিও করতে পারি। কিন্তু আমি দেখলাম আপনি অতিরিক্ত কোনো আমল করেন না। তাহলে কীসের ভিত্তিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার ব্যাপারে একথা বলেছেন যে আপনি শুনলেন? আনসারী জবাব দিলেন- আমল তো কেবল তাই, যা আপনি দেখেছেন। আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাযি. বলেন- ‘আমি তার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি আমাকে ডেকে বললেন- ﻣﺎ ﻫﻮ ﺍﻻ ﻣﺎ ﺭﺍﻳﺖ، ﻏﻴﺮ ﺍﻧﻲ ﻻ ﺍﺟﺪ ﻓﻲ ﻧﻔﺴﻲ ﻻﺣﺪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﻏﺸﺎ ﻭ ﻻ ﺍﺣﺴﺪ ﺍﺣﺪﺍ ﻋﻠﻰ ﺧﻴﺮ ﺍﻋﻄﺎﻩ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻳﺎﻩ . ‘আমল তাই যা আপনি দেখেছেন। তবে আমি কখনো কোনো মুসলমানকে ধোঁকা দেওয়ার কথা চিন্তা করি না এবং আমি কোনো ব্যক্তির কোনো কল্যাণে হিংসা করি না যা থাকে আল্লাহ দান করেছেন।’ আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাযি. একথা শুনে বললেন- ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺘﻲ ﺑﻠﻐﺖ ﺑﻚ ﻭﻫﻲ ﺍﻟﺘﻲ ﻻ ﻧﻄﻴﻖ . ‘এটাই সেই গুণ, যা আপনাকে সেই মর্যাদায় পৌঁছিয়েছে। আর যে গুণটি অর্জন করার সামর্থ্য আমাদের নেই।’ মুসনাদুল ইমাম আহমাদ: ২০/১২৪, হাদীস নম্বর: ১২৬৯৭ হাদীসের মান: সহীহ (আলা শরতিশশাইখাইন, তাহক্বীক্ব : শায়খ শুআইব আরনাঊত রাহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি আজ আমাদের প্রত্যেক মুসলিমের জন্য বিশেষ করে ওলামায়ে কেরামের জন্য হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করা দরকার। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে উক্ত হাদীসটির উপর আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।।

Post a Comment

0 Comments