পই পই করে হিসাব রাখতে হবে ইসলাম কী বলে

# পই_পই_করে_হিসাব_রাখবেন ; # ইসলাম_কী_বলে ? -------------------------------------------------------- আমরা স্বভাবগতভাবে প্রতিহিংসাপরায়ণ। ‌প্রতিশোধ আমাদের অভ্যাস। কিন্তু ইসলাম যেকোনো অসদাচরণের জবাবে ভালো আচরণের নির্দেশ দেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের পর সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। অথচ নিজের মাতৃভূমি থেকে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে প্রিয় রাসূল কে অসহনীয়, অবর্ণনীয়, কষ্ট দিয়ে, জুলুম নির্যাতন করে, বের করে দেওয়া হয়েছিলো। হাঁ, এটাই বিজয়ের আদর্শ। আমরা মুসলিম ৷ সে হিসেবে আমাদের প্রত্যেকটি কাজ হতে হবে নববী আদর্শের অনুসরণে ৷ আমাদের নবীজি { স: } ০৮ হিজরীতে মক্কা বিজয় করেছিলেন ৷ সে ছিলো এক মহাবিজয় ৷ ইসলামের বিজয় ৷ মুসলমানদের বিজয় ৷ কুফুরীর বিদায় ৷ আল্লাহর নবী { স:} মক্কা নগরীত বিজয়ের বেশে প্রবেশ করলেন ৷ দাম্ভিকতার সাথে নয় ৷ বিনয়ের সাথে ৷ অশ্রুশিক্ত নয়নে ৷ আল্লাহর শুকরিয়া আদায়রত অবস্থায় ৷ প্রবেশ করেই দিয়েছিলেন ক্ষমার ঘোষণা ৷ "লা তাছরীবা আলাইকুমুল ইয়াওমা"… যারা কাবা ঘরে প্রবেশ করবে…যারা আবূ সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে …যারা নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে অবস্থান করবে …যারা মোকাবালা না করে হাতিয়ার রেখে দিবে…তাদের সবাইকে ক্ষমার ঘোষণা দেওয়া হলো… যে কোনো বাহানায় শুধু ক্ষমা আর ক্ষমা… এতো দিন যে সকল কাফেররা শত্রুতা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো, তাদের সবাইকে ক্ষমা করলেন ৷ মক্কার কাফেররা অতীত শত্রুতার জন্য লজ্জিত হলো ৷ তওবা করে দলে দলে মুসলমান হলো ৷ ইসলাম জায়গা করে নিলো তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় ৷ মক্কা বিজয় হলো ৷ বিজয় হলো সমগ্র মক্কাবাসীদের হৃদয় ৷ প্রতিশোধে নয়…ক্ষমার আদর্শে … আর আমরা? বিজয়ের পর প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠি ৷ যে কোনো বানোয়াট অপরাধে…ঠুনকো অজুহাতে… তাই বলছিলাম, প্রতিশোধ নয়; ক্ষমাই হলো বিজয়ের আদর্শ ৷ আল্লাহ তা'আলা কুরআনে কারীমে অসদাচরণের জবাবে ভালো ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন- এর দ্বারা শত্রুও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে যায়। ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺴْﺘَﻮِﻱ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔُ ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟﺴَّﻴِّﺌَﺔُ ﺍﺩْﻓَﻊْ ﺑِﺎﻟَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻨَﻚَ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻪُ ﻋَﺪَﺍﻭَﺓٌ ﻛَﺄَﻧَّﻪُ ﻭَﻟِﻲٌّ ﺣَﻤِﻴﻢٌ সমান নয় ভাল ও মন্দ। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। (সূরা ফুসসিলাত, আয়াত নম্বর: ৩৪) অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা স্পষ্ট ক্ষমা করে দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন- ﻭَﻟﻴَﻌﻔﻮﺍ ﻭَﻟﻴَﺼﻔَﺤﻮﺍ ۗ ﺃَﻻ ﺗُﺤِﺒّﻮﻥَ ﺃَﻥ ﻳَﻐﻔِﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻜُﻢ ۗ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔﻮﺭٌ ﺭَﺣﻴﻢٌ তাদের ক্ষমা করা উচিত এবং দোষক্রটি উপেক্ষা করা উচিত। তোমরা কি কামনা করো না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। (সূরা নূর, আয়াত নম্বর: ২২) হাদীস শরীফে এসেছে- ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ ﺻِﻞْ ﻣَﻦْ ﻗَﻄَﻌَﻚَ ﻭَﺃَﺣْﺴِﻦْ ﺇﻟَﻰ ﻣَﻦْ ﺃَﺳَﺎﺀَ ﺇﻟَﻴْﻚَ ﻭَﻗُﻞِ ﺍﻟﺤَﻖَّ ﻭَﻟَﻮْ ﻋَﻠَﻰ ﻧَﻔْﺴِﻚَ হযরত আলী রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিতঃ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তুমি তার সাথে সুসম্পর্ক জুড়ে চলো যে তোমার সাথে তা নষ্ট করতে চায়, তার প্রতি সদ্ব্যবহার কর যে তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং হক কথা বলো; যদিও তা নিজের বিরুদ্ধে হয়।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৪১ হাদিসের মান: সহীহ হাদীস) অতএব, আমাদের মনে রাখতে হবে, পই পই করে হিসাব রাখার শিক্ষা ইসলাম দেয়না,,,,,,, ইসলাম দেয় পই পই করে ক্ষমার শিক্ষা। ক্ষমা করলে ইযযত কমে যায় না বরং বৃদ্ধি পায়। হাদীসে এসেছে- ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫُﺮﻳﺮﺓ : ﺃَﻥَّ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻗَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻧَﻘَﺼَﺖْ ﺻَﺪَﻗَﺔٌ ﻣِﻦْ ﻣَﺎﻝٍ، ﻭَﻣَﺎ ﺯَﺍﺩَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﺒْﺪًﺍ ﺑِﻌَﻔْﻮٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻋِﺰًّﺍ، ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻮَﺍﺿَﻊَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﻓَﻌَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ  ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ . হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- সাদাকাহ্ কখনো মাল-সম্পদকে কম করে না, আর ক্ষমা করে দেওয়া ইযযতকে শুধু বৃদ্ধিই করে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয় অবলম্বন করে, আল্লাহ তা'আলা তাকে উঁচু মর্যাদা দান করেন। (সহীহ মুসলিম শরীফ)

Post a Comment

0 Comments